প্রতি বছরের মতো এবারও এই সময়ে লালমনিরহাট জেলার নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষগুলো কর্মহীন হয়ে পড়েছে। হাতে কাজ না থাকা এসব মানুষ এখন বেকার জীবন যাপন করছে। বিশেষ করে লালমনিরহাট জেলার তিস্তা, ধরলা, রত্নাই, স্বর্ণামতি, শিংগীমারী, সানিয়াজান, ত্রিমোহনী, সাকোয়া, মরাসতি, ধোলাই, গিদারী, ছিনাকাটা নদী তীরবর্তী গ্রামগুলোর হতদরিদ্র মানুষ এ পরিস্থিতির শিকার হয় বরাবরই।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বছরের এই সময়ে কর্মহীন হয়ে পড়া এসব মানুষকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে সংসার পরিচালনা করতে হয়।
তাদের মধ্যে অনেকে জানান, ৪০দিনের কর্মসূচি লালমনিরহাটে এখনও শুরু না হওয়ায় তারা এ বেকায়দায় পড়েছেন। আমন ধান কাটার ভরা মৌসুম শুরু হতে আরও সময় লাগবে ২০/২৫দিন। এর মধ্যে আগাম জাতের কিছু ধান কাটা হলেও পরিমাণে তা কম। যে কারণে আমনের ভরা মৌসুমের অপেক্ষায় থেকে কর্মহীন মানুষগুলোকে বেকার জীবন যাপন করতে হচ্ছে বলে জানান ভুক্তভোগীদের অনেকে। আবার কেউ কেউ গ্রাম থেকে শহরে গিয়েও পাচ্ছে না কোন কাজ। ফলে তারা খেয়ে না খেয়ে বর্তমানে কষ্টকর জীবন যাপন করছে।
এদিকে অভিযোগ উঠেছে নদী তীরবর্তী এসব গ্রামগুলোর মানুষের কর্মহীনতার নামে বিভিন্ন এনজিও কোটি কোটি টাকার অনুদান নিয়ে আসলেও তা শুধু চলছে কাগজে কলমে আর সাইনবোর্ডে। বাস্তবে নেই তেমন কোন প্রতিফলন।
সংশ্লিষ্ট এলাকার কর্মহীন মানুষের কেউ কেউ এমন অভিযোগ উত্থাপন করে বলেন, অভাব মোচনে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে সংসার চালাতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। আবার ধান ঘরে তোলার সাথে সাথে সুদ সমেত গৃহীত ওই ঋণ শোধ দিতে হবে তাদের। এ নিয়েও তারা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।
জানা গেছে, আশ্বিন-কার্তিক এই দুই মাসের কর্মহীন হতদরিদ্রদের কর্ম সৃষ্টির জন্য সরকারের ৪০দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচির প্রকল্প চলার কথা থাকলেও সরকারি বরাদ্দ না পাওয়ায় এ বছর লালমনিরহাটে এখনও শুরু হয়নি প্রকল্পটি। ফলে সুবিধা ভোগীরা কর্মহীন হয়ে বর্তমানে মানবেতর জীবন যাপন করছে।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে সংশ্লিষ্ট বিভাগের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, প্রকল্পটির সরকারি বরাদ্দ হাতে না পাওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে এখন কিছুই বলা যাবে না।